ঝটপট হাতে রান্না চড়িয়ে লিলি ছুটল তার ৬ মাস বয়সী বাচ্চার কাছে। রান্না ঘরের বাইরেই একটা হাইচেয়ারে বাচ্চাকে মিষ্টি আলুর পিউরিসহ বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। এখন ফিরে এসে তার চক্ষু চড়কগাছ!
এই মজাদার মিষ্টি আলোর পিউড়ির গন্তব্য হওয়ার ছিল বাবুর পেট, কিন্তু লিলি দেখতে পেল খাবারটার কিছু অংশ বাচ্চাটার বুকের উপরে, কিছুটা হাই চেয়ারের ট্রেতে এক কোনায়, বাকিটা মাথার চুলের কোনায় আর জামায় লেপ্টে আছে ... দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্র!
![story of a mother and her son who will start his solid journey](https://matrittobd.files.wordpress.com/2024/05/solid-food-story.jpeg)
ফেইসবুক রিলসের বিভিন্ন ভিডিও দেখতে দেখতে লিলির মনে হতো বাচ্চাকে সলিড শুরু করা না জানি কত সহজ আর রোমান্টিক বিষয়! খাবার দিব আর বাচ্চা হালুম হুলুম করে খাবে!
এরপর লিলি মাতৃত্ব সলিড ফুড কোর্সে ভর্তি হয়ে ছিল। দারুন সব গাইডলাইনে ভরা এই কোর্সটা করে সে বেশ কনফিডেন্ট ফিল করেছিল। ইন্টারনেট খুঁজে সবচেয়ে মজাদার মিষ্টি আলুর পিউরি বানিয়ে ছিল। কিন্তু কেন যেন বাচ্চাটা খাবারটাকে "শত্রু ভাবাপন্ন এলিয়েন" ভেবে একেবারে দফারফা করে দিল! রাজপূত্র তার চামচের তরবারি দিয়ে যেভাবে পিউরিটা চারদিকে ছড়াচ্ছিলো তাতে লিলি'র একটু কান্না পেল!
সবকিছু এত কঠিন হতে হবে কেন! লিলি ভাবলো
এই নিয়ে তৃতীয়বার মিষ্টি আলোর পিউরি চেষ্টা করল, প্রতিবারই দৃশ্যপট ক্রাইমসিনে রূপান্তরিত হয়ে যায়, আর লিলি বাঘা গোয়েন্দার মতো সতর্ক হাতে সেই ক্রাইমসিন পরিষ্কার করে।
এরপর কোনটার পিউরি চেষ্টা করা যায় - আপেল পিউরি? যদি বাবু সেটাও অপছন্দ করে? লিলি ভাবতে চেষ্টা করল
একটু পরে হাল ছেড়ে দিয়ে ভাবলো, ধুর! এর চেয়ে সহজ মাতৃত্ব গ্রুপে প্রশ্ন করা! কোন না কোন আপু উত্তর দিবেন।
শেষ বিকেলে একটু ফ্রি হয়ে মাতৃত্ব ফেসবুক গ্রুপে ঢু মারল, আর তখনই বেবি ফুড কুকিং কোর্সের পোস্টটা চোখে পড়ল। কোর্সের বিস্তারিত পরে সে ইন্সট্রাক্টর জান্নাতুল ফারহানা আপুর প্রোফাইলে ঢু মেরে আসলো আর মুগ্ধ হয়ে গেল।
কোর্সে থাকছে বাচ্চার ছয় মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত খাবারের গাইডলাইন - এতটুকু পড়েই লিলি সিদ্ধান্ত নিল এটা তার জন্য জরুরী একটা কোর্স!